খুলনায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) ইন্সপেক্টর মঞ্জুরুল আহসান মাসুদের বিরুদ্ধে কলেজ ছাত্রীকে (২০) ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে।
রবিবার (১৫ মে) দুপুরে খুলনা মহানগরীর ৯নং ছোট মির্জাপুর রোডের কাগজী হাউজ নামক বাড়ীর নিচতলায় দৈনিক ইনকিলাবের নামে ভাড়া নেয়া অফিসে এঘটনা ঘটে। তাৎক্ষনিক অভিযানে ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে পুলিশ।
পুলিশ ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা গেছে, আজ দুপুরে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ধর্ষণের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে। বিএল কলেজ ছাত্রীকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) প্রেরণ করা হয়েছে। তবে ঘটনার মূল অভিযুক্ত পিবিআই খুলনার পুলিশ পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) মঞ্জুরুল আহসান মাসুদকে এখনো পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেনি।
জানা গেছে, কলেজছাত্রী ওই মেয়েটির বাড়ী খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলায়। তিনি ২০২১ সালে এইচএসসি পাশ করেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের ছবি সংক্রান্ত একটি সমস্যা নিয়ে ৫ দিন আগে পিবিআই ইন্সপেক্টর মাসুদের কাছে আসেন ওই নারী। এসুবাদে তাকে সহযোগিতা করার কথা বলে পুলিশ কর্মকর্তা মাসুদ নগরীর ছোট মির্জাপুর রোডের কাগজী হাউজের জাতীয় পত্রিকার একটি অফিসের কক্ষে নিয়ে যায়। সেখানে দীর্ঘক্ষণ অবস্থান করে সমস্যা সমাধানের প্রতিশ্র“তি দিয়ে তাকে ধর্ষণ করে ওই পুলিশ কর্মকর্তা মঞ্জুরুল আহসান মাসুদ। ঘটনার পর ধর্ষণের শিকার কলেজ ছাত্রী খুলনা সদর থানায় যেয়ে অভিযোগ করেন। এরপর ওই তাকে নিয়ে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) সোনালী সেন, সহকারী কমিশনার (খুলনা জোন) বায়েজিদ ইবনে আকবর ও খুলনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হাসান আল মামুনের নেতৃত্বে পুলিশ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে যান। এসময় অফিসটি তালাবদ্ধ থাকায় পুলিশ কর্মকর্তারা তালা ভেঙ্গে অফিস কক্ষে প্রবেশ করেন।
খুলনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হাসান আল মামুন জানান, নগরীর ৯নং ছোট মির্জাপুর রোডস্থ কাগজী হাউজের ওই বাড়িতে দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকার অফিস রয়েছে। তবে, ঘটনার সঙ্গে পত্রিকার কেউ সম্পৃক্ত আছে কি-না সেটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে এঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। এ কারণে ওই কলেজ ছাত্রীকে মেডিক্যাল পরীক্ষার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে প্রেরণ করা হয়েছে। এঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
জানা যায়, ঘটনাস্থলটি দৈনিক ইনকিলাবের একটি অফিস হিসেবে পরিচিত হলেও এঘটনায় পত্রিকার খুলনা ব্যুরো প্রধান ডিএম রেজা সোহাগ বলেন, এক বছর আগে দৈনিক ইনকিলাবে যে দু’জন কর্মরত ছিলেন তাদের কর্তৃপক্ষ অব্যাহতি দিয়েছে। এছাড়া ওই সময় অফিসটিও ছেড়ে দেয়া হয়েছে। বর্তমানে ওখানে ইনকিলাবের কোনো অফিস নেই। এ ছাড়া ধর্ষণের ঘটনাটিও আমি জানি না।
ইনকিলাবের অপর প্রতিনিধি আবু হেনা মুক্তি বলেন, বটিয়াঘাটার মাছ ব্যবসায়ী হাসান তারেক জাকির ও বাচ্চু আলী বেগ নামে দু’জনের সঙ্গে তারা যৌথভাবে অফিস ভাড়া নেন। একপাশে ইনকিলাবের অফিস অন্য পাশে তারা বসতেন। তিনি খুলনার বাইরে থাকায় হাসান তারেক জাকির পিবিআই ইন্সপেক্টর মাসুদসহ ওই মেয়েকে নিয়ে অফিসে যায় বলে তিনি শুনেছেন। তবে, জাকিরের ফোন বন্ধ থাকায় তিনি এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাতে পারেননি।