ভারতের গুজরাটে ঝুলন্ত সেতু ভেঙে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪১ জনে। সেতু ভেঙে পড়ার ঘটনায় এ পর্যন্ত ১৭৭ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে, এখনও নিখোঁজ রয়েছে শতাধিক। তাদের সন্ধানে চলছে উদ্ধার অভিযান। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সোমবার (৩১শে অক্টোবর) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, গুজরাটের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হর্ষ সাংগাভি সোমবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, সেতু ভেঙে পড়ার ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। এর পাশাপাশি ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এদিকে আনন্দবাজার পত্রিকার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্থানীয়দের অভিযোগ, এই সেতু জনসাধারণের জন্য চালু করার আগে প্রশাসনের কাছ থেকে সবুজ সঙ্কেত নেওয়া হয়নি। সেতুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে কোনও ‘ফিটনেস সার্টিফিকেট’ নেওয়া হয়নি। রোববার সন্ধ্যার বিপর্যয়ের অন্যতম কারণ হিসাবে কর্তৃপক্ষের এই গাফিলতিকে দায়ী করছেন কেউ কেউ।
গুজরাটের মোরবিতে নদীর উপর যে ঝুলন্ত সেতুটি ভেঙে পড়েছে, তা সংস্কারের পর কিছু দিন আগেই জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছিল। সেতু ফের চালু হওয়ার ৬ দিনের মাথায় এই বিপর্যয়। সঙ্কীর্ণ সেতুটিতে রোববার সন্ধ্যায় প্রায় ৫০০ মানুষ উঠে পড়েছিলেন বলে দাবি।
সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে দেখা যায়, সেতুর উপর দাঁড়িয়ে কী ভাবে লাফালাফি করছেন অনেকে। এর পরেই নদীর উপর হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে সেতুটি।
রবিবার স্থানীয় সময় বিকেল ৬টা ৪২ মিনিটে ভেঙে পড়ে ব্রিটিশ আমলে নির্মিত সেতুটি। সংস্কারকাজ শেষে গত ২৬ অক্টোবর নতুন করে সেতুটি চালু করা হয়েছিল। ভেঙে পড়ার সময় প্রায় ৫০০ মানুষ সেতুটির ওপরে ছিলেন, যাদের অধিকাংশই পর্যটক। অনেকে বিশেষ পূজার আচার পালন করছিলেন। সেতুটি ভেঙে পড়ার পরে কিছু মানুষ সাঁতরে তীরে আসার চেষ্টা করেন। কিছু মানুষকে ভাঙা সেতুর রেলিং ধরে প্রাণ বাঁচানোর চেষ্টা করতেও দেখা যায়।
ঘটনার পরই গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র পটেলকে ফোন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি রাজ্য প্রশাসনকে উদ্ধারকাজে গতি আনার নির্দেশ দিয়েছেন। পরে প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয় থেকে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে বলা হয়, দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য করার জন্য এবং পরিস্থিতির দিকে সজাগ নজর রাখার জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন।
এ দুর্ঘটনায় শোক জানিয়ে নরেন্দ্র মোদি নিহতদের পরিবারকে ২ লাখ টাকা করে আর্থিক সহায়তার ঘোষণা দিয়েছেন। এছাড়া, রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে নিহতদের ৪ লাখ টাকা আর্থিক সহায়তার ঘোষণা দেয়া হয়।