লিখিত অভিযোগের সূত্র ছাড়াও সরেজমিনে কৃষ্ণনগর ইউনিয়নে গেলে বেলেডাঙ্গা গ্রামের নুরুল ইসলাম, নাজমুল, তপন মন্ডল, মোস্তফা কবীর, আফজাল, আবুল বিশ্বাস সুরুজ মিয়া, মিন্টু মিয়া সহ শত শত এলাকাবাসী সাংবাদিকদের জানান ২০২১- ২২ অর্থবছরে ইউনিয়ন উন্নয়ন সহায়তা খাতের (বিজিবি) সাধারণ বরাদ্দে প্রথম কিস্তিতে ৩লক্ষ ৮১ হাজার ৬শত টাকা এবং দ্বিতীয় কিস্তিতে ৩ লক্ষ৮০হাজার ৬ শত টাকা বরাদ্দ। উক্ত টাকা বরাদ্দ পাওয়ার পর চেয়ারম্যান তার গৃহপালিত ৩জন ইউপি সদস্য ব্যতীত অন্য কোন ইউপি সদস্যকে না জানিয়ে নিজের ইচ্ছামত ৫টি প্রকল্প হাতে নেয়।
প্রকল্পের মধ্যে কৃষ্ণনগর ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে ৩ লক্ষ টাকা ব্যয় বঙ্গবন্ধু মুরাল নির্মাণে স্থানীয় নির্মাণ শ্রমিকদের নিয়ে কাজ করলে বিষয়টি জানাজানি হওয়ার ভয়ে খুলনার এক নির্মাণ শ্রমিক এর সঙ্গে ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা চুক্তিতে দায় সারা ভাবে কাজ শেষ করে বাকি ভ্যাট বাদে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা চেয়ারম্যান নিজে আত্মসাৎ করেছে। দ্বিতীয় প্রকল্পে ইউনিয়ন এর বিভিন্ন ওয়ার্ডে জলবদ্ধতা নিরসনে পাইপ বসানো বাবদ ৮৪ হাজার ৬শত টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয় এখানে নাম মাত্র ২০ হাজার টাকা খরচ দেখিয়ে পুরাতন পানির লাইন সংস্কার কাজ করে ৫০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছে। তৃতীয় প্রকল্প হিসেবে ইউনিয়নে দুস্থ মহিলাদের মাঝে সেলাই মেশিন বিতরণ বাবদ ১ লক্ষ ৭৬ হাজার টাকা বরাদ্দে দেওয়া হয়। এখানে মেশিন প্রতি ১০,৩৮৮ টাকা এস্টিমেট মূল্য দেখিয়ে অতি নিম্নমানের পুরাতন ৪৭ শত টাকা মূল্যের ১৭ টি বাটারফ্লাই সেলাই মেশিন বিতরণ করে। এখানে ওই প্রকল্পে ৮০হাজার টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে। বিতরণকৃত নিম্নমানের অনেক সেলাই মেশিন অকেজ হয়ে গেছে বলে ভুক্তভোগীরা জানান। চতুর্থ প্রকল্পে কৃষ্ণনগর ইউনিয়নে বালিয়াডাঙ্গা স্বাস্থ্য কল্যাণ কেন্দ্র হতে মৃত ডাক্তার মোসলেম উদ্দিন এর বাড়ি অভিমুখে একটি মোটর কেনা ছাড়া সুপ্রিয় পানির লাইন সংস্কার বাবদ ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা বরাদ্দ হয় সেখানে একটি মোটর ও কয়েকটি স্ট্যাম দিয়ে সংস্কারের নামে ২০-৩০ হাজার টাকা খরচ করে বাকি ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা ঘরে লোড করেছে। পঞ্চম প্রকল্পে ইউনিয়নে শিশুদের পুষ্টি সহায়তা করণ প্রকল্প দেখিয়ে ২৫ হাজার টাকা বরাদ্দ নিয়ে নামমাত্র ১০ হাজার টাকার শিশু খাদ্য বিতরণ করা হয় সেখান থেকে ১০/১৫ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছে।এছাড়াও ২০২১ -২২ অর্থবছরে ইউনিয়নের মাক্স ও খেলাধুলা সামগ্রী বিতরণের নামে ১ লক্ষ টাকা (এডিপি) আত্মসাৎ করেছে।চেয়ারম্যান নিজেই প্রকল্প সভাপতি থাকায় কেউ কিছু জানতে পারে না। কৃষ্ণনগর ইউনিয়নে উন্নয়ন সহায়তা প্রকল্প ছাড়াও কাবিখা, কাবিটা, এডিপি সহ বিভিন্ন প্রকল্প অনিয়ম-দূর্নীতির প্রতিবাদ করলে তাদের বিরুদ্ধে প্রভাব খাটিয়ে মিথ্যা চাঁদাবাজি মামলা সহ বিভিন্ন হয়রানি মূলক মামলা দিয়ে মুখ বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ করেন। এ বিষয়ে চেয়ারম্যান সাফিয়ার নিকট জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের জানান তার কোন প্রকল্পে অনিয়ম-দূরনীতি নাই। সব প্রকল্পের সুষ্ঠুভাবে কাজ হয়েছে। আমার প্রতিপক্ষরা আমাকে হয়রানি করার জন্য বিভিন্ন দপ্তরে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে আসছে এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খন্দকার রবিউল ইসলামের নিকট জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের জানান এ বিষয়ে আমার কোন হাত নাই।আপনারা স্থানীয় সরকার এর সাতক্ষীরার উপ-পরিচালকের সঙ্গে কথা বলেন।অভিযোগের সত্যতা জানার জন্য স্থানীয় সরকার সাতক্ষীরার উপপরিচালক মাশরুবা ফেরদৌস এর নিকট মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি মিটিংয়ে ব্যস্ত আছেন বলে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান।