কালুরঘাটে নতুন সেতু নির্মাণের গুরুত্ব তুলে ধরে সাংসদ মোছলেম উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বোয়ালখালীসহ দক্ষিণ চট্টগ্রামবাসীর দীর্ঘদিনের দুঃখ দূর করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কালুরঘাটে রেল কাম সড়ক সেতু নির্মাণ করছেন।
এটি তার অগ্রাধিকার প্রকল্প। সেতুটি নির্মাণ হলে দক্ষিণ চট্টগ্রামের মানুষদের দীর্ঘদিনের একটি দাবি পূরণ হবে। মেয়াদোত্তীর্ণ কালুরঘাট সেতুটি দিয়ে কর্ণফুলী নদী পারপারে মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। নতুন সেতু হলে মানুষ সেই দুর্ভোগ থেকে রক্ষা পাবে। এ জন্য জরুরি ভিত্তিতে সেতু নির্মাণের কাজ শুরু করতে হবে।’
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন— ইউশিন ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশনের কান্ট্রি ম্যানেজার কোণ উক পার্ক, কালুরঘাট রেল কাম সড়ক সেতুর প্রজেক্ট ম্যানেজার মো. গোলাম মোস্তফা, ডেভেলপমেন্ট ডিজাইন কনসালটেন্টস লিমিটেডের সিনিয়র ইঞ্জিয়ার মো. আনোয়ারুল হক, জেনারেল ম্যানেজার মো. রিয়াজুর রহমান প্রমুখ।
এর আগে, ২০১৮ সালের কালুরঘাটে নতুন সেতুর প্রস্তাবিত প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছিল ১ হাজার ১৫১ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। তবে রেলসংযোগসহ সড়ক সেতুটি কারা কথা ছিল কর্ণফুলী নদীর নাব্য থেকে ৭ দশমিক ৬ মিটার উচ্চতায়। পরে অর্থায়ন ও নকশা চূড়ান্ত হলেও বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) আপত্তিতে বন্ধ হয়ে যায় প্রকল্পটি। শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী রেল সংযোগসহ সড়ক সেতু নির্মাণের নির্দেশ দেন। এরপর দ্বিতীয় কালুরঘাট সেতু প্রকল্পে গতি আসে।
এরই ধারাবাহিকতায় ২০২০ সালের ১৯ মে রেলপথ মন্ত্রণালয়ে কোরিয়ান দাতা সংস্থা ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন ফান্ডের (ইডিসিএফ) বাংলাদেশ প্রতিনিধিদের সঙ্গে একটি বৈঠক হয়। সেখানে নতুন সেতুর অর্থায়নের বিষয়টি নিশ্চিত করে ইডিসিএফ। এরপর গত বছরের নভেম্বর দিকে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা ও ডিটেইলড ডিজাইন তৈরীর কাজ শুরু করতে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দেয় সংস্থাটি।
রেলওয়ে সূত্র জানা গেছে, নতুন করে কালুরঘাট সেতুর সমীক্ষা করার দায়িত্ব পেয়ে কোরিয়ান এক্সিম ব্যাংক রেলওয়ের কাছে দেখানো প্রেজেন্টেশনে কালুরঘাটে নতুনে সেতু নির্মাণের পাশাপাশি কর্ণফুলী নদীতে আরেকটি সংযুক্ত টানেল, এলিভেটেড সেতুসহ বেশ কয়েকটি ডিজাইনও দেখিয়েছে। তবে সরকারের ফোকাস যেহেতু শুধুমাত্র সেতুর উপর তাই তারা সেদিকেই ফোকাস করতে বলেছে সমীক্ষা যাচাইকারী প্রতিষ্ঠানকে। সেই যাই হোক আগামী মে মাসের শেষে সমীক্ষা রিপোর্ট জমা দেয়ার পরে স্পষ্ট হবে কেমন সেতু জুটছে কালুরঘাটবাসীর ভাগ্যে।
তবে ভায়াডাক্ট (স্থলভাগের উপরের অংশ) ও মূল সেতু মিলিয়ে নতুন সেতুর দৈর্ঘ্য হবে প্রায় চার কিলোমিটার। কর্ণফুলী নদীর নাব্যতা রক্ষায় ১২ দশমিক ২ মিটার উচ্চতায় নতুন সেতু নির্মাণের জন্য জান আলী হাট স্টেশন থেকে রেললাইন উচ্চতার কাজটি শুরু হবে। সম্ভাব্যতা যাচাই শেষে নিশ্চিত হওয়া যাবে জান আলী হাট স্টেশন থেকে পরবর্তী চার কিলোমিটারে কি পরিমাণে ভূমি অধিগ্রহণ করতে হবে।