মোংলা বন্দরে বিদেশী জাহাজ আগমন এবং নির্গমনকারী সকল জাহাজের সেইফটি ও সিকিউরিটি নিশ্চিতকরণ, চ্যানেলের নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণ, দুর্ঘটনাকবলিত পরিস্থিতিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে সহায়তার লক্ষ্যে ‘ভেসেল ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেম’ (ভিটিএমআইএস) প্রবর্তন করা হয়েছে।
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বুধবার (১৬ মার্চ) বিকালে মোংলা বন্দরে ভেসেল ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেম এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আগামী দিনে নৌবাণিজ্যে মোংলা বন্দর নেতৃত্ব দেবে। এ লক্ষ্যে সবধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। বঙ্গোপসাগর থেকে মোংলা বন্দর পর্যন্ত ১৩০ কিলোমিটারের নৌ চ্যানেলে সাড়ে ৯মিটার ড্রাফটের জাহাজ চলাচলের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। মোংলা বন্দরের আপগ্রেডেশনের লক্ষ্যে ছয় হাজার কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। বন্দর পর্যন্ত রেললাইন সংযোজন করা হয়েছে। ছয় লেনের রাস্তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পদ্মা সেতু এবং রেল লাইন চালু হলে বন্দরের গতি আরো বেড়ে যাবে। রিজিওনাল কানেক্টিভিটি বেড়ে যাবে। সে লক্ষ্যে আমাদের ভিশনারি লিডার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কাজ করছেন। শেখ হাসিনা শুধু বর্তমান নয়, ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তা করে পদক্ষেপ নেন। তাঁর রাজনীতি-ভবিষ্যতে মানুষ কোথায় কিভাবে থাকবে তা নিয়ে।
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, স্বাধীনতার সাড়ে তিন বছরে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে অনেক ধরনের কটাক্ষ করা হয়েছিল বঙ্গবন্ধুকে খাটো করার জন্য। বঙ্গবন্ধুকে খাটো করতে পারলে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করা যাবে-এ জন্য অনেকেই কটাক্ষ করতেন। ৭৫ এর ১৫ আগস্টের পর দেশকে অন্ধকারে ঠেলে দেয়ার জন্য জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়া যা যা করা দরকার তা করেছে। গত ১৩ বছরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ অন্ধকার থেকে ঘুরে দাঁড়িয়েছে।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ মুসার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন ভিটিএমআইএসের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি মোঃ মাহফুজুল হান্নান।
ভিটিএমআইএস প্রবর্তনের উদ্দেশ্য হলো-মোংলা বন্দরকে আধুনিকায়ন, বন্দর সীমানায় আগত সমুদ্রগামী জাহাজসমূহ মনিটরিং করাসহ দক্ষতার সাথে হ্যান্ডলিং করার মাধ্যমে প্রদত্ত সেবার মান উন্নীত করা। বন্দর এলাকায় দুর্ঘটনা পরবর্তীতে তদন্তকরণ ও সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণসহ জাহাজ সমূহের গতিবিধি মনিটরিং করার লক্ষ্যে আইএমও কনভেনশেনের আলোকে ইন্টারন্যাশনাল শিপ পোর্ট সিকিউরিটি কোড বাস্তবায়ন করা। বন্দর এলাকায় দুর্ঘটনা পরবর্তীতে তদন্ত ও তদনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণসহ জাহাজ সমূহের গতিবিধি মনিটরিংসহ উক্ত ঘটনাবলি সংরক্ষণ করা। মোংলা বন্দরে ইতিপূর্বে কোন ভিটিএমআইএস ছিলনা। ফলে বিদেশী জাহাজের সাথে ভেরি হাই ফ্রিকোয়েন্সি (ভিএইচএফ) এর মাধ্যেমে যোগাযোগ করা হতো। বর্তমানে ভিটিএমআইএস এর মাধ্যমে যোগাযোগ অব্যাহত আছে। মোংলা বন্দর আর্ন্তজাতিক বন্দর হিসাবে ভিটিএমআইএস এর মাধ্যমে বিদেশী জাহাজের আগমন ও নির্গমন নিরাপত্তার সাথে নিশ্চিত করা হচ্ছে। বন্দরের নিরাপত্তা নিশ্চিতের কারণে জাহাজের আগমন বৃদ্ধি পেয়েছে; যা দেশের অর্থনীতির উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রাখবে। ভিটিএমআইএস প্রবর্তন শীর্ষক প্রকল্পের কাজের মেয়াদ ছিল ২০১৭ সালের অক্টোবর থেকে ২০২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। প্রকল্পের প্রধান কাজ ছিল-হাইস্পীড বোট সংগ্রহ এবং ভিটিএমআইএস প্রবর্তন। এজন্য ব্যয় হয়েছে ৫৪ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা। হাইস্পীড বোট সংগ্রহে ব্যয় হয়েছে ৯ কোটি ৬২ লক্ষ টাকা এবং ভিটিএমআইএস প্রবর্তনে ব্যয় হয়েছে ৪৪ কোটি ৬৮ লক্ষ টাকা।