রাজধানীর ধানমন্ডিতে মহসিন নামের এক ব্যবসায়ী নিজের মাথায় গুলি করে আত্মহত্যা করেছে। আত্মহত্যা করা মহসিন চিত্রনায়ক রিয়াজের শ্বশুর। বুধবার (২ ফেব্রুয়ারি) রাত সোয়া ৯টার দিকে মহসিন আত্মহত্যা করেন বলে জানা গেছে।
রাজধানীর ধানমন্ডি থানা পুলিশ জানিয়েছে, নিজের পিস্তল দিয়ে তিনি নিজের মাথায় গুলি করে।
আত্মহত্যার আগে ফেসবুক লাইভে এসে বিভিন্ন কথা বলেন মহসিন। এর আগে দরজায় সাদা কাগজে লিখেন ‘মামা দরজা খোলা, হাতলের হ্যান্ডেল চাপ দিয়ে ভেতরে ঢুক।’ কাগজটি স্কচটেপ দিয়ে দরজায় লাগানো ছিল।
লাইভে তিনি বার্ধক্যের নিঃসঙ্গতা নিয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন, আমি ক্যানসার আক্রান্ত। আমার ব্যবসা এখন বন্ধ। আমার এক ছেলে থাকে অস্ট্রেলিয়ায়। আমি বাসায় একাই থাকি। আমার ভয় করে যে, আমি বাসায় মরে পড়ে থাকলে, লাশ পচে গেলেও কেউ হয়তো খবর পাবে না।
লাইভে মহসিন আরও বলেন, পিতামাতা যা উপার্জন করে তার সিংহভাগ সন্তানদের পেছনে খরচ করে। প্রকৃত বাবারা না খেয়েও সন্তানদের খাওয়ানোর চেষ্টা করে, ফ্যামেলিকে দেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু ফ্যামেলি অনেক সময় বুঝতে চায় না। তিনি বলেন, আমি বিভিন্ন লোকজনের কাছে পাঁচ কোটি টাকা পাই।কিন্ত অনেক চেষ্টা করেও সে টাকা উদ্ধার করতে পারিনি। নিজেকে আর মানিয়ে নিতে পারলাম না।
এরপর পিস্তলের লাইসেন্স দেখান। বলেন, আমি যেটা দিয়ে আত্মহত্যা করছি সেটি ইলিগ্যাল কিছু না। এটির লাইসেন্স আছে। সেটি নবায়নও করা হয়েছে। আমি চলে যাব। আত্মীয় স্বজন যারা আছো, যেহেতু বাবাও আমাকে জায়গাটা দেয়নি, আমি যে কবরস্থানটা করেছি সেখানে আমাকে দাফন করো না। মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধে একটি কবরস্থান হয়েছে, সেখানে তোমরা আমাকে দাফন করে দিও। প্রত্যেকটা লোক আমার সাথে প্রতারণা করেছে। আমার বাবা, মা, ভাইরা, প্রত্যেকটা লোক, এভরিওয়ান।
লাইভে কথা বলার সময় তার সামনে টেবিল ছিল। ওই টেবিলে কাফনের কাপড় ছিল। এর ওপর একটি চিরকুট ছিল; তাতে লেখা আছে, এখানে কাফনের কাপড় রাখা আছে। যা আমি ওমরা হজে ব্যবহার করেছিলাম। যারা দেখছেন, তাদের সাথে এটাই শেষ দেখা।
সবাই ভালো থাকবেন। এভাবে ১৫ মিনিটি কথা বলে ১৬ মিনিটের সময় নিজের মাথায় গুলি করে মহসিন। কালেমা পড়তে পড়তে নিজের মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করেন তিনি।