ক্রমেই ভয়ংকর রূপ নিচ্ছে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’। ঘূর্ণিঝড় আম্পান যেসব এলাকায় আঘাত হেনেছিল, সিত্রাং ঠিক সেসব এলাকায় আঘাত হানতে পারে বলে মনে করছে যুক্তরাষ্ট্রের আবহাওয়া মডেল বা জিএফএস।
আবহাওয়াবিদদের ধারণা, ক্ষয়ক্ষতির দিক দিয়ে এই ঝড়টি সিডরের মতো।
গত সোমবার (১০ই অক্টোবর) যুক্তরাষ্ট্রের আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল থেকে প্রাপ্ত সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, আগামী সপ্তাহে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’ সরাসরি বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উপকূলে আঘাত হানতে পারে।
এ বিষয়ে কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু বিষয়ক গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ বলেন, অক্টোবরের ১৮ থেকে ২৫ তারিখের মধ্যে বঙ্গোপসাগরে একটি সুপার সাইক্লোন সৃষ্টির আশঙ্কার কথা নির্দেশ করছে আমেরিকার আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল গ্লোবাল ফোরকাস্ট সিস্টেম বা সংক্ষেপে জিএফএস।
তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় আম্পান স্থলভাগের যেসব এলাকায় আঘাত হেনেছিল, সর্বশেষ পূর্বাভাস অনুসারে সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং প্রায় একই এলাকায় আঘাত করার আশঙ্কা নির্দেশ করছে আমেরিকার আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল। ঘূর্ণিঝড়টির কারণে সমুদ্র পৃষ্ঠের বায়ুচাপ ৯৪১ মিলিবার পর্যন্ত নেমে যেতে পারে; সেই সাথে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২১০ থেকে ২৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত উঠতে পারে। এই গতিবেগে উপকূলে আঘাত হানলে ২০০৭ সালের সিডরের চেয়ে কম ক্ষয়ক্ষতি হবে না।
মোস্তফা কামাল বলেন, অক্টোবরের ২৫ তারিখ অমাবস্যা। ফলে সম্ভাব্য এই ঘূর্ণিঝড়টি যদি অক্টোবরের ২২ থেকে ২৫ তারিখের মধ্যে স্থলভাগে আঘাত করে, তবে যে স্থানে আঘাত করবে সেই স্থানের উপকূলীয় এলাকা লন্ডভন্ড করে দিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা প্রায় শতভাগ। সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়টি যে স্থানে আঘাত করবে সেই স্থানের উপকূলীয় এলাকায় ১৫ থেকে ২০ ফুট পর্যন্ত উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসও হতে পারে বলেও জানান তিনি।
বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার (ডব্লিউএমও) অধীন জাতিসংঘের এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সাগর তীরের ১৩টি দেশের (বাংলাদেশ, মিয়ানমার, ভারত, পাকিস্তান, মালদ্বীপ, থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা, ওমান, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরান, সৌদি আরব ও ইয়েমেন) আবহাওয়াবিদদের সংস্থা এস্কেপ ঘূর্ণিঝড়ের নাম দিয়ে থাকে। নামের ক্রম অনুযায়ী এবার বঙ্গোপসাগরে কোনো ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হলে তার নাম হবে ‘সিত্রাং’। ‘সিত্রাং’ নামটি থাইল্যান্ডের দেয়া।