সুর্যমূখী চাষে আগ্রহী এখন রাজাপুর কৃষকরা। আর মাত্র অল্প কিছুদিন পরেই জমিন থেকে সূর্যমুখী ফসল ঘরে উঠবে। তাই সূর্যমুখীর হাসির মতো কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে|
অল্প সময়ে ও লাভজনক ফসল হওয়ায় ইতোমধ্যে জেলার রাজাপুর উপজেলার কৃষকদের মধ্যে সুর্যমূখী চাষের আগ্রহ বেড়েছে। ৯০-১১০ দিনের মধ্যে উত্তোলন, বাজারে উচ্চ মূল্যের লাভজনক ফসল হওয়ায় ঝালকাঠি জেলার রাজাপুর উপজেলার কৃষকরা সূর্যমুখী ফসল চাষে উৎসাহিত হয়েছিল।
সূর্যমুখী ফসলে উন্নতমানের তৈল থাকে ও বীজে লিনোলিক এসিড বিদ্যমান। হৃদরোগীদের জন্য সূর্যমুখীর তৈল খুবই উপকারী।
এ ছাড়াও সূর্যমুখীর খৈল গরু ও মহিষের উৎকৃষ্টমানের খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এর বীজ ছাড়ানোর পর মাথা গুলো গরুর খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা যায়। গাছ ও পুষ্পস্তবক জ্বালানী হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
রাজাপুর উপজেলা কৃষি অফিসার মো. রিয়াজ উল্লাহ বাহাদুর জানান, এ বছর উচ্চফলনশীল আরডিএস ২৭৫, হাইসান-৩৩ ও বারি সূর্যমুখী-৩ জাতের সূর্যমুখী চাষ করা হয়েছে। কৃষি বান্ধব সরকারের প্রণোদনা কর্মসূচি ও কৃষক উদ্বুদ্ধকরণের মাধ্যমে এ বছর রাজাপুর ৬টি ইউনিয়নে ৩৫ হেক্টর জমিতে জমিতে সূর্যমুখীর চাষ করা হয়েছে।
এ ধরণের কর্মসূচি অব্যাহত রাখার মাধ্যমে একদিকে যেমন উৎকৃষ্ট মানের ভোজ্যতেল উৎপাদন করা সম্ভব হবে, অন্যদিকে কৃষিকে একটি লাভজনক পেশায় নিয়ে যাওয়া সম্ভবপর হবে। আমরা প্রতিনিয়ত সম্পৃক্ত-অসম্পৃক্ত তেল ভোজ্য হিসেবে ব্যবহার করছি। অথচ সূর্যমূখীর তেলে কোলেস্টেরোল মাত্রা নেই,স্বাস্থ্যের জন্য ভাল, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি সম্পন্ন তেল ব্যবহারে সূর্যমুখী উৎপাদন ও বাজার জাত করা দরকার।
রাজাপুর উপজেলার পূর্ব রাজাপুর এলাকার কৃষক নাসির উদ্দিন খান বলেন, গত বছর সূর্যমুখীর চাষ করে সফল হয়েছি। তাই এ বছরও ১ বিঘা জমিতে সূর্যমুখীর চাষ করেছি। ফলন অনেক ভালো। আশা করছি, গত বছরের চেয়ে এ বছর বেশি লাভবান হতে পারবো।
রাজাপুর উপজেলার পূর্ব রাজাপুর এলাকার কৃষক মো. রাকিব বলেন, লেখা-পড়ার পাশাপাশি কৃষি কাজ করেন|এ বছর ১ বিঘা জমিতে সূর্যমুখী চাষ করে সন্তুষ্ট। ফলন অনেক ভালো হয়েছে। আশা করছি, গত বছরের চেয়ে এ বছর বেশি লাভবান হতে পারবো। তাদের জমিতে হাসি ফুটিয়েছে সূর্যমুখী ৷ তা দেখতে শহর থেকে প্রতিদিন অনেক দর্শনার্থীরাই সেখানে ভীর জমায়৷
ঝালকাঠি জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মনিরুল ইসলাম জানান, সূর্যমুখী একটি উচ্চমূল্যের বাণিজ্যিক তেলজাতীয় ফসল, কৃষিকে বাণিজ্যিক ভাবে লাভবান ও শস্য বৈচিত্রকরণ বৃদ্ধিতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, ঝালকাঠি জেলা উক্ত ফসল চাষাবাদে কৃষকদের উৎসাহিত করে যাচ্ছে।
সরকার প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ ভোজ্যতেল আমদানি করে থাকে। বর্তমানে দেশে চাষ উপযোগী সূর্যমুখী ফসল উৎপাদনের মাধ্যমে উৎকৃষ্টমানের ভোজ্যতেল উৎপাদনের সুযোগ তৈরী হয়েছে। ফলে দেশের প্রচুর পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে। কোলেস্টেরল মুক্ত সূর্যমুখী তেল উৎপাদনে বাংলাদেশ আরও এগিয়ে যাবে এবং তেল উৎপাদনে বাংলাদেশ হবে স্বয়ং সম্পূর্ণ। এমনটি আশাবাদ ব্যাক্ত করেন জেলা কৃষি অধিদপ্তর। বর্তমানের বাজারদর অনুপাতে সূর্যমূখী ফসল চাষে ভাল মুনাফার সম্ভাবনা দেখছেন কৃষকরা।