যৌতুকের দাবীতে স্ত্রীকে মারপিট সহ হত্যা চেষ্টার ঘটনায় তালার শাহীনুর ইসলাম নামের পুলিশের এক এ.এস.আইকে জেল হাযতে প্রেরন করেছে আদালত।
বৃহস্পিতবার ধার্য্যদিনে আদালতে হাজির হয়ে জামিন প্রার্থনা করলে বিজ্ঞ আদালত জামিন না মঞ্জুর করে শাহীনুরকে জেল হাযতে প্রেরন করেন। মো. শাহীনুর ইসলাম তালা উপজেলার নারায়নপুর গ্রামের মো. শাহাবুদ্দীন গাজীর ছেলে। তিনি বর্তমানে বাগেরহাট জেলার মোংলা থানার চরেরহাট ক্যাম্পে এ.এস.আই হিসেবে দায়িত্বরত রয়েছে। তার বিপি নং : ৭৬৯৬০৫৬১৩৩।
মামলার বাদী তালা সদরের বাবর আলী শেখ’র কন্যা ফরিদা আক্তার এবং তার ভাই আব্দুর রাজ্জাক জানান, ১৯৯৯ সালের ৭ ফেব্রুয়ারী পারিবারিক ভাবে মো. শাহীনুর ইসলামের সাথে ফরিদা আক্তারের ইসলামী শরিয়া ও প্রচলিত আইন মোতাবেক বিয়ে হয়। বিয়ের সময় ফরিদার পিতা শাহীনুরকে নগদ টাকা সহ বিভিন্ন আসবাবপত্র প্রদান করেন। বর্তমানে ফরিদা ও শাহীনুর দম্পত্তির ২টি কন্যা সন্তান সহ বিবাহিত বড় কন্যার ঘরে তাদের নাতী রয়েছে।
আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বিয়ের পর তার বোনের স্বামী শাহীনুরের যৌতুকের দাবীর প্রেক্ষিতে তালা উপশহরের উপর পৈত্রিক জমি থেকে ৮ শতক জমি দান করা হয়। ওই জমির উপর বাড়ি করে তারা বসবাস করে আসছে। কিন্তু বাড়ির ওই জমি তার বোনের নামে লিখে দেয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে বোনের স্বামী শাহীনুর ইসলাম। একপর্যায়ে ওই জমি নিজের নামে লিখে দেয়ার দাবীতে শাহীনুর তার স্ত্রীকে প্রতিনিয়ত চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। এতে স্ত্রী ফরিদা আক্তার রাজী না হওয়ায় গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর শাহীনুর ইসলাম তাকে বেধড়ক মারপিট করা সহ শ্বাসরোধে হত্যার চেষ্টা করে। এঘটনায় গুরুতর আহত ফরিদাকে তালা হাসপাতালে ভর্তি করা সহ থানায় একটি মামলা দাখিল করা হয়। কিন্তু শাহীনুর পুলিশের অফিসার হওয়ায় তালা থানা পুলিশ তার বিরুদ্ধে মামলা নিতে অনিহা প্রকাশ করে। এতে বাধ্য হয়ে ফরিদা আক্তার বাদী হয়ে সাতক্ষীরা বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা (পিটিশন ৫০৮/২১) দায়ের করেন। ট্রাইব্যুনাল মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্ত পূর্বক রিপোর্ট দাখিলের জন্য তালা সদর ইউপি চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দিলে, ইউপি চেয়ারম্যান সরদার জাকির হোসেন তদন্ত পূর্বক বিজ্ঞ ট্রাইব্যুনাল আদালতে রিপোর্ট দাখিল করেন। রিপোর্টের ভিত্তিতে আদালতে মামলার (নাওশি ৮২/২২) বিচার কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর থেকে ধুরন্তর শাহীনুর ইসলাম বিজ্ঞ ট্রাইব্যুনাল আদালত থেকে বিভিন্ন মিথ্যা অযুহাত দিয়ে একের পর এক জামিন নিতে থাকে। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) ধার্য্য তারিখে শাহীনুর বিজ্ঞ ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে জামিন প্রার্থনা করলে আদালত জামিন না মঞ্জুর করে তাকে জেল হাযতে প্রেরন করেন।