পাকিস্তান থেকে ৪১ বছর পর পরিবারের কাছে ফিরে এলেন সাতক্ষীরার তালা উপজেলার একলিমা বেগম। ১৯৮১ সালে তিন সন্তান রেখে নিখোঁজ হন তিনি। পরিবারের সদস্যরা সে সময় অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তার কোনো সন্ধান পায়নি। অবশেষে ফেসবুকের মাধ্যমে সন্ধান মিলল সেই একলিমার। ৪১ বছর পর নিজ জন্মভূমিতে ফিরেছেন তিনি। সাথে ছিলেন পাকিস্তানে তার দ্বিতীয় সংসারের এক সন্তানও।
বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) দুপুরে উপজেলার গঙ্গারামপুর গ্রামের বাড়িতে পাকিস্তানি সন্তানকে নিয়ে ফিরে আসেন একলিমা। সেখানে সৃষ্টি হয় এক আবেগঘন পরিবেশ। একলিমার বাড়ি ফেরার খবর ছড়িয়ে পড়লে সেখানে হাজির হন এলাকার মানুষজন। একলিমাকে পেয়ে খুশি পরিবারের সদস্যরা।
একলিমা বেগম ওই গ্রামের মৃত ইসমাইল শেখের মেয়ে। পরিবার বলছে, বাংলাদেশে থাকাকালীন স্বামীর মৃত্যুর পর মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন তিনি। পরে একদিন নিখোঁজ হয়ে পাকিস্তানে চলে যান। সেখানে গিয়ে আবারও বিয়ে হয় তার। বর্তমানে পাকিস্তানের শিয়ালকোটের দিলওয়ালিতে দুই ছেলে ও দুই মেয়ের সাথে থাকেন একলিমা। তবে কিভাবে তিনি পাকিস্তানে পৌঁছেছেন তা মনে করতে পারেছেন না তিনি।
জানা গেছে, ফেসবুকের মাধ্যমে একলিমার সন্ধান পায় তার পরিবার। মৃত্যুর আগে অন্তত একবার নিজ মাতৃভূমিতে আসার ইচ্ছা ছিল। পাকিস্তান থেকে তার পরিবারের সদস্যরা একটি ভিডিও বার্তা ধারণ করে ফেসবুকে যশোরের একটি গ্রুপে শেয়ার করেন। সেই ভিডিওটি চোখে পড়ে একলিমার ভাতিজা জাকির শেখের। ভিডিওতে একলিমার বলা নামগুলো নিজের দাদা-বাবা ও চাচাদের সাথে মিলে যাওয়ায় তিনি বিষয়টি নিয়ে বাড়িতে আলোচনা করেন। ভিডিও দেখিয়ে নিশ্চিত হন যে ভিডিওর একলিমা বেগমই তার হারিয়ে যাওয়া ফুফু। এরপর তারা পারিবারিকভাবেই ভিডিও কলে যোগাযোগ করেন একলিমার সঙ্গে।
জাকির বলেন, ‘কিছুদিন আগে ফেসবুকের মাধ্যমে ফুফুর খোঁজ পাই। তার পর থেকে তার সঙ্গে বাড়ির সবার নিয়মিত কথা হচ্ছিল। অবশেষে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান এম্বাসির সহযোগিতায় তাকে বাড়িতে ফেরানো সম্ভব হয়েছে।’
জানা গেছে, শুরুতে পাকিস্তানের একটি শেল্টার হোমে ছিলেন একলিমা। সেখানে মুহাম্মদ সিদ্দিক নামের একজনের সঙ্গে তার পরিচয় হয় এবং পরে তারা বিয়ে করেন। মুহাম্মদ সিদ্দিক কয়েক বছর আগে মারা গেছেন। সেখানে তার পরিবারে দুই ছেলে এবং দুই মেয়ে রয়েছে। বাংলাদেশে একলিমা বেগমের প্রথম ঘরের এক ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে।