চলতি বছর বিশ্বের কোন দেশ থেকে কতজন মানুষ হজ্জের সুযোগ পাবেন সেই তালিকা প্রকাশ করেছে সৌদি আরবের হজ্জ ও ওমরাহবিষয়ক মন্ত্রণালয়।
সৌদি আরবের সংবাদমাধ্যম ওকাজ এবং সৌদি গ্যাজেট একাধিক সূত্রের বরাত দিয়ে কোটা প্রকাশের খবর দিয়েছে। এদিকে, এবার বাংলাদেশের ৫৭ হাজার ৫৮৫ জন হজ্জ করতে পারবেন।করোনা মহামারির কারণে গত দুই বছর বিদেশিদের হজ্জে অংশগ্রহণ বন্ধ ছিল। চলতি মাসের শুরুর দিকে সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয় সৌদি আরব। একই সঙ্গে এ বছর ১০ লাখ হজযাত্রী সৌদিতে প্রবেশের অনুমতি পাবেন বলে জানানো হয়।সৌদি আরবের প্রকাশিত হজ্জ কোটা অনুযায়ী, বিশ্বের সর্ববৃহৎ মুসলিম দেশ ইন্দোনেশিয়া থেকে এ বছর সর্বোচ্চ সংখ্যক মানুষ হজ্জ করার সুযোগ পাবেন। ইন্দোনেশিয়ার ১ লাখ ৫১ জন হজ্জে অংশ নিতে পারবেন। এরপরই দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৮১ হাজার ১৩২ জন হজ করতে পারবেন পাকিস্তান থেকে। তৃতীয় স্থানে থাকা ভারতের ৭৯ হাজার ২৩৭ জন হজ্জের সুযোগ পাবেন। এছাড়া চতুর্থ স্থানে থাকা বাংলাদেশের ৫৭ হাজার ৫৮৫ জন হজ্জ করতে পারবেন।তবে এ বছর সবচেয়ে কমসংখ্যক মানুষ হজ্জ করার সুযোগ পাবেন আফ্রিকার দেশ অ্যাঙ্গোলা থেকে। এই দেশটির মাত্র ২৩ জন হজ্জ যাত্রী হজ্জ করতে পারবেন। এই অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৪৩ হাজার ৮ জনকে হজ্জে পাঠাতে পারবে নাইজেরিয়া।সৌদির হজ্জ মন্ত্রণালয় বলেছে, আরব দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৩৫ হাজার ৩৭৫ জন হজের সুযোগ পাবেন মিসর থেকে। ইরানের ৩৮ হাজার ৪৮১ জন এবং তুরস্কের ৩৭ হাজার ৭৭০ জন হজ্জ করতে পারবেন।সূত্র বলছে, এ বছর যুক্তরাষ্ট্রের জন্য হজ্জের কোটা নির্ধারণ করা হয়েছে ৯ হাজার ৫০৪ জনের। এছাড়া রাশিয়া থেকে ১১ হাজার ৩১৮ জন, চীনের ৯ হাজার ১৯০ জন, থাইল্যান্ডের ৫ হাজার ৮৮৫ জন এবং ইউক্রেনের ৯১ জন নাগরিক হজ্জ করতে পারবেন।
এর আগে, সৌদি আরবের হজ্জ ও ওমরাহবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ঘোষণায় বলা হয়, চলতি বছর মোট ১০ লাখ মানুষ হজ্জ করার সুযোগ পাবেন। এর মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রায় ৮৫ শতাংশ অর্থাৎ ৮ লাখ ৫০ হাজার বিদেশিকে এবার হজের অনুমতি দেয়া হবে। সৌদি আরব থেকে দেড় লাখ মানুষ হজ্জের অনুমতি পাবেন।
প্রত্যেক বছর বিশ্ব থেকে যতসংখ্যক মানুষ হজ্জের অনুমতি পান তার তুলনায় মাত্র ৪৫ দশমিক ২ শতাংশ চলতি বছরে হজ্জের অনুমতি পেয়েছেন। করোনাভাইরাস মহামারির কারণে গত দুই বছর ধরে সৌদি আরব বিদেশিদের হজ্জের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। মহামারির প্রকোপ কমে যাওয়ায় চলতি বছর নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়ে সীমিতসংখ্যক মানুষকে হজের অনুমিত দেয়া হয়েছে।
এ বছর হজযাত্রীদের জন্য দুটি শর্ত নির্ধারণ করেছে সৌদি আরব। বিদেশি হজ্জ যাত্রী দের বয়স ৬৫ বছরের নিচে এবং সৌদি আরবের টিকাদান কর্মসূচিতে যেসব টিকা ব্যবহারের অনুমতি আছে সেগুলোর কোনো একটির দুই ডোজ নেয়ার সনদ থাকতে হবে।
এছাড়া অনুমোদিত যাত্রীদের অবশ্যই সৌদি আরবের বিমানে ওঠার অন্তত ৭২ ঘণ্টা আগে করোনার পিসিআর টেস্ট করাতে হবে এবং সেই টেস্টে নেগেটিভ সনদ পেতে হবে।
মহামারির প্রথম বছর, অর্থাৎ ২০২০ সালে দেশি-বিদেশি কোনো ব্যক্তিকে হজের অনুমতি দেয়নি সৌদি সরকার। পরের বছর ২০২১ সালে কেবল সৌদি আরবের নাগরিক ও দেশটিতে অবস্থানরত মুসল্লিদের হজ পালনের অনুমতি দেয়া হয়। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, গত বছর ৫৮ হাজার ৭৪৫ জন মানুষ হজ্জ পালন করেছেন। মহামারির আগের বছরে হাজির সংখ্যা ছাড়িয়ে যেত ২০ লাখ।