ভারতের পেট্টাপোল ও বাংলাদেশের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি রপ্তানি বাণিজ্যে বৈধ পণ্যের সাথে চোরাই পণ্য পাচার বেড়ে গেছে বহুগুন। অস্ত্র মাদক বেস্ফারক নিষিদ্ধ ঘোষিত ঔষধ ও স্বর্ণসহ বিভিন্ন পণ্য কৌশলে পাচার হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এতে সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব।
রাতারাতি আঙুলফুলে কলাগাছ হচ্ছে ছদ্মবেশী ব্যবসায়িরা। রবিবার দুপুরে বেনাপোল বন্দরে ভারত থেকে আমদানিকৃত পণ্য বোঝাই ট্রাক থেকে নিষিদ্ধ ঘোষিত ভারতীয় ফেন্সিডিল ও যৌন উত্তেজক ট্যাবলেটসহ বিভিন্ন ধরনের ঔষুধ আটক করেছে কাষ্টম সদস্যরা। যার আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ঢাকার স্মার্ট লাইফ ফুটওয়ার ইন্ডাস্ট্রিজ। ৭ আগস্ট ৮৪০ ব্যাগ মাইক্রোসেল পিটি নামে একটি পণ্য আমদানি করেন প্রতিষ্ঠানটি।। যার আমদানি মূল্য ৩৭ হাজার মার্কিন ডলার। পণ্য চালানটির রপ্তানি প্রতিষ্ঠানের নাম এসএস ব্লু-কেম ইন্ডাস্ট্রি রাজস্থান ভারত। বন্দর ও কাষ্টমসের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের যোগসাজস থাকার অভিযোগ উঠেছে। এদিকে কাষ্টমসের কিছু অসাধু কর্মকর্তার অনৈতিক কর্মকান্ডের কারণে বাড়ছে বৈধ পণ্যের সাথে অবৈধ পণ্য। বিজিবি বিএসএফ পুলিশও কাষ্টম সদস্যরা দু-একটি চালান আটক করলেও অধিকাংশ চালান যাচ্ছে পার পেয়ে। ঘাপলা বাণিজ্য দিনদিন প্রকট হয়ে যাচ্ছে। তদন্তের নামে বিভিন্ন ফাকফোঁকড় দিয়ে পার পেয়ে যায় এসব রাঘব বোয়ালরা। ফলে বাড়ছে এ বন্দর দুটি দিয়ে পণ্য চোরাচালান।
বেনাপোল কাস্টমসের যুগ্ম কমিশনার আব্দুর রশিদ মিয়া জানান, বিশেষ গোপন খবরে জানতে পেরে বেনাপোল বন্দর এলাকা থেকে পণ্য বোঝাই ট্রাকটি জব্দ করা হয়। পরে ট্রাকটি কাস্টম হাউজে এনে তল্লাশি চালিয়ে ৫৯৯ বোতল ফেন্সিডিল এবং বিভিন্ন ধরনের ২২ হাজার ৫১৮ পিস যৌন উত্তেজক ঔষধ খুঁজে উদ্ধার করা হয়। যার সিএন্ডএফ এজেন্ট সুঁজুতি এন্টারপ্রাইজ। ভারতীয় ট্রাক নং ডাব্লিউ বি ৪১ই ০৯১৮। গাড়ি আজ সকালে বেনাপোল বন্দরে প্রবেশের পর বিশেষ গোপন খবরে কাস্টমস গাড়িটি বন্দর থেকে কাস্টম হাউজে এনে বিভিন্ন সংস্থার সামনে গাড়ির ত্রিপল খুলে ৫৯৯ বোতল ভারতীয় ফেন্সিডিল এবং বিভিন্ন ধরনের ঔষধ খুঁজে পায়। সুঁজুতি এন্টারপ্রাইজ নামক একটি সিএন্ডএফ এজেন্ট পন্যচালানটি খালাশের আগেই কাস্টমের জালে ধরা পড়ে গেল চোরাই পণ্য ভর্তি ট্রাকটি।
এর আগে গত ১৫ জুন রাতে বেনাপোল বন্দরে ভারতীয় পণ্যবাহী একটি ট্রাক থেকে আমদানি নিষিদ্ধ ৭৪৯ বোতল ফেনসিডিল, ১৮৬ কেজি গাঁজা, বিপুল পরিমাণ বাজি, ওষুধ ও প্রসাধনী সামগ্রী উদ্ধার করে বেনাপোল পোর্ট থানা পুলিশ। এদিকে স্থানীয়রা জানান, বন্দরে সিসি ক্যামেরা আর বিভিন্ন সংস্থার নজরদারি এড়িয়ে বৈধ পথে বৈধ পণ্যের সাথে ভারতীয় ট্রাকযোগে প্রায়ই ঢুকছে মাদকের বড় বড় চালান। এসব পণ্যের সাথে সরাসরি ভারতীয় ট্রাক চালকরা জড়িয়ে পড়ছে অবৈধ অর্থের লোভে। আর ঘটনার সাথে এপার-ওপারের রাঘববোয়ালরা বরাবর থাকছে ধরা ছোয়ার বাইরে। এ কারণে কোনভাবে মাদক প্রবেশ বন্ধ হচ্ছে না।