যশোর জেলা ডিবি পুলিশের ওসি রুপন কুমার সরকার জানান, হত্যাকান্ডের পর পুলিশ সুপারের নির্দেশে মামলার তদন্ত শুরু করে ডিবি পুলিশ। ডিবি’র এস আই শেখ শাহিনুর রহমানের নেতৃত্বে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই শামীম হোসেন ও এস আই মফিজুল ইসলাম পিপিএম’র সমন্বয়ে একটি চৌকশ টিম তদন্তে নেমে ১৫ জানুয়ারি রাত দেড়টা থেকে ১৬ জানুয়ারি ভোর ৫টা পর্যন্ত যশোরের অভয়নগর, মণিরামপুর ও কেশবপুর এবং খুলনার ডুমুরিয়ার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে খুলনার ডুমুরিয়ার রুদাঘরা গ্রামের ইসহাক গোলদারের ছেলে ইকরামুল গোলদার ওরফে জুয়েল (১৯), যশোরের অভয়নগর উপজেলার সুন্দলী পূর্বপাড়ার মৃত নিতাই বিশ্বাসের ছেলে যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা প্রজিৎ বিশ্বাস ওরফে বুলেট (৪৬), মণিরামপুর উপজেলার সুজাতপুরের পরিতোষ বিশ্বাসের ছেলে পলব বিশ্বাস ওরফে সুদিপ্ত (২৪), খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার চুকনগরের রিফাত অটো রাইচ মিলের পাশে মিল মালিকের বাড়ির ভাড়াটিয়া সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার দক্ষিণ কদমতলা গ্রামের মৃত শিব পদ মন্ডলের ছেলে ইতোপূর্বে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণকৃত সন্ত্রাসী প্রশান্ত মন্ডল (৩৮), ডুমুরিয়া উপজেলার দিঘলিয়া গ্রামের মৃত-বিষ্ণুপদ মন্ডলের ছেলে বিজন কুমার মন্ডল ওরফে বিনোদকে (৪২) আটক করে।
আটককৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে ডিবি ওসি রুপন কুমার সরকার জানান, আটককৃতরা প্রত্যেকেই “নিউ বিপ্লবী কমিউনিস্ট” পার্টির সক্রিয় সদস্য। তারা পরস্পর যোগসাজসে তাদের দলীয় ছদ্মনাম ব্যবহার করে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলা সমূহের বিভিন্ন এলাকায় হত্যা, চাঁদাবাজি সংঘটিত করে আসছিলো। ইতোপূর্বে আত্মসর্ম্পণ করে মুক্ত হয়ে নতুন করে সদস্য সংগ্রহ করে তারা সন্ত্রাসী সংগঠন চালু করেছে।
আটককৃতদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে একটি লোহার তৈরি ওয়ান শুটারগান, ৩ রাউন্ড গুলি, ২টি গুলির খোসা, ৬ রাউন্ড ১২ বোর কার্তুজ, ১টি লোহার রড, ১টি ককটেল, ১০ গ্রাম বোমা তৈরির পাউডার (গান পাউডার), ৫০ গ্রাম বোমা তৈরির তারকাটা, একটি এয়ারগান ও উত্তম মেম্বর হত্যার মিশনে ব্যবহৃত ৫টি মোবাইল ফোন, ২টি মটর সাইকেল উদ্ধার করেছে পুলিশ।
ওসি রুপন আরও জানান, ধার্যকৃত চাঁদার টাকা না পেয়ে ১০ জানুয়ারি রাত ৮টার দিকে হরিশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে মাঠে নবনির্বাচিত ইউপি সদস্য উত্তম সরকারকে গুলি করে হত্যা করে। অবৈধ অস্ত্রগুলি উদ্ধার সংক্রান্তে এস আই শামীম হোসেন বাদী হয়ে অভয়নগর ও মনিরামপুর থানায় পৃথক দু’টি মামলা দায়ের করেন। যার একটি অভয়নগরে (নং-০৯, তাং-১৫/০১/২০২২) অপরটি মনিরামপুর থানায় (নং-০৯, তাং-১৫/০১/২০২২) হয়েছে। এছাড়াও আটককৃতদের নামে বিভিন্ন থানায় একাধিক হত্যা, চাঁদাবাজি মামলা রয়েছে বলে জানান ওসি রুপন সরকার।