গত বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারি) যশোর সদর উপজেলার নরেন্দ্রপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের টয়লেটের সেপটিক ট্যাংক থেকে ফাহিমা বেগমের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
পিবিআই যশোরের পুলিশ সুপার রেশমা শারমিন জানান, প্রায় ২১ বছর আগে জাহাঙ্গীর মোড়ল ও ফাহিমা বেগম বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের দাম্পত্য জীবনে মরিয়ম (১৮) ও মুসফিকা (১১) নামে দুই কন্যা সন্তান রয়েছে। অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর মোড়ল ও তার স্ত্রী ফাহিমা বেগম যশোর জেলাসহ বিভিন্ন জেলায় ইটভাটায় কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। দাম্পত্য জীবনে তাদের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়াদি নিয়ে মনোমালিন্য ছিল এবং প্রায়ই ঝগড়া হতো।
একপর্যায়ে গত ১৫ ডিসেম্বর গ্রামে ধানের কাজ শেষ করে অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর মোড়ল ও তার স্ত্রী ফাহিমা বেগম নিজ বাড়ি থেকে বের হয়ে অভিযুক্তের শ্বশুরবাড়ি চরগ্রাম যান। সেখান থেকে বিকেলে তালা ব্রিজ পার হয়ে ইজিবাইক স্ট্যান্ড থেকে তারা ইজিবাইকে করে চুকনগর আসেন। চুকনগর থেকে বাসে টিকিট কেটে যশোরে ইটভাটার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। পথে চিনাটোলা বাজার থেকে একটু সামনে বাস নষ্ট হয়ে গেলে তারা ইজিবাইকে করে মনিরামপুর থানার পাশে যান।
মনিরামপুর থানার সামনের ক্লিনিকে ফাহিমা বেগম বাথরুমে যায়। সেখান থেকে বের হয়ে তারা মাছের আড়ৎ পার হয়ে মন্দিরের সামনে থেকে ইজিবাইকে করে নরেন্দ্রপুর মোড়ে এসে নামেন। তারপর সেখানে ইজিবাইক বা ভ্যান না পাওয়ায় অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর মোড়ল ও তার স্ত্রী ফাহিমা বেগম হেঁটে ইটভাটার উদ্দেশ্যে রওনা হন। পথে তাদের ব্যক্তিগত ও সাংসারিক বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটি ও ঝগড়া চলতে থাকে। নরেন্দ্রপুর হাইস্কুলের কাছাকাছি আসলে ফাহিমা বেগম জাহাঙ্গীর মোড়লের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করতে থাকে। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে তর্কাতর্কি শুরু হয়।
ফাহিমা বেগম জাহাঙ্গীর মোড়লকে রেখে সামনে হাঁটতে থাকেন। তখন জাহাঙ্গীর মোড়ল পেছন থেকে রাস্তার পাশে পাওয়া বাঁশ দিয়ে ফাহিমা বেগমের মাথায় আঘাত করেন। এতে ফাহিমা বেগম উপুড় হয়ে রাস্তার পাশে পড়ে যান। এ সময় জাহাঙ্গীর মোড়ল তার গলায় ওড়না পেঁচিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে মরদেহ স্কুলের বাইরে কাঁচা রাস্তার পাশের সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দেন। শুক্রবার অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর মোড়লকে আদালতে হাজির করা হলে তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেন।