সাতক্ষীরায় অপহরণ মামলার প্রধান আসামী শাহরিয়ার হোসেন রাজকে গ্রেপ্তারসহ ভুক্তভোগী পরিবারের নিরাপত্তার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করা করেছে। শুক্রবার (২৪ মে) দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের আব্দুল মোতালেব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ফিংড়ী গ্রামের মোঃ ফজর আলী।
ভুক্তভোগী মোঃ ফজর আলী সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ফিংড়ী গ্রামের আরশাদ মালীর ছেলে। অপরদিকে, অভিযুক্ত শাহরিয়ার হোসেন রাজ (১৯) ফিংড়ী গ্রামের আব্দুর রশিদ ঢালীর ছেলে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ফজর আলী বলেন, গত পাঁচ মাস আগে রাজ নামের ছেলেটি আমার বাড়িতে টাইসের কাজ করতে এসে সুকৌশলে আমার মোবাইল নম্বর নিয়ে যায়। আমার মোবাইল ফোনটি বাড়ীতে থাকার সুবাদে রাজ প্রায় ফোন করে আমার নাবালিকা মেয়েকে উত্যক্ত করে। একই সাথে আপত্তিকর কথা বলে কৌশলে কুপ্রস্তাব দেয়। আমার মেয়ে বখাটে রাজের ফাঁদে পা না দিয়ে বিষয়টি আমাকে জানায়। পরবর্তীতে আমি রাজকে আমার মোবাইলে কল করতে নিষেধ করলে সে আমার উপর চড়াও হয়ে গালিগালাজ করতে থাকে। পরবর্তীতে আমার মেয়ে মাদ্রাসায় যাতায়াতের পথে দলবদ্ধভাবে রাজ উত্যক্তসহ নোংড়া কথার্বাতা বলতে থাকে। বিষয়টি মাদ্রাসার শিক্ষকরা রাজের পরিবারকে জানালে তারা কোন ব্যবস্থা নেয়না। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৫/০৪/২০২৪ রাতে লোকদ্ধারা ডেকে নিয়ে আমার মেয়েকে জোর করে তুলে নিয়ে যায় রাজ। রাতে মেয়েকে খুঁজার একপর্যায়ে জানতে পারি রাজ জোর করে তুলে নিয়ে গেছে। তাৎক্ষনিকভাবে পরিবারের সকলে রাজের বাড়ীতে পৌঁছালে সেখানে তাদের দেখা যায় না। খোঁজাখুঁজির এক পর্যায় মেয়ের দেখা মেলে রাজের চাচা শহীদ ঢালীর ঘরে। এসময় ঘরে রাজ সহ তার চাচা উপস্থিত ছিলেন। মেয়েকে নিয়ে আসতে চাইলে রাজ ও তার চাচা শহীদ ঢালী আমাদের জোর করে বের করে ঘরে তালা লাগিয়ে দেয়। কোন উপায়ান্ত না পেয়ে আমার ছেলে সরকারি জরুরী সেবা ৯৯৯ এ কল করে পুলিশের সহযোগীতা চাইলে পুলিশের টিম এসে আমার মেয়েকে উদ্ধার করে সাতক্ষীরা সদর থানায় নিয়ে যায়। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে রাজ ও তার চাচা শহীদ ঢালী পালিয়ে যায়। ঘটনার পরদিন আমি বাদী হয়ে চার জনের নামে সাতক্ষীরা সদর থানায় অপহরণ মামলা দায়ের করি। এ মামলার প্রধান আসামী মাদকাসক্ত ও অপহরণকারী শাহরিয়ার হোসেন রাজ, রাজের বাবা মোঃ আব্দুর রশীদ ঢালী, রাজের আশ্রায়দাতা শহীদ ঢালী ও রাজের মা রাফিজা খাতুন। এ মামলায় আশ্রায়দাতা শহীদ ঢালী বর্তমানে কারাগারে রয়েছে। তাছাড়া অপহরণ মামলার আসামী শাহরিয়ার রাজ পলাতক রয়েছে বলে জানতে পেরেছি। তবে দিনের বেলা মাঝেমধ্য তাকে এলকায় ঘুরাঘুরি করতে দেখা যায়।
এসময় লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, মামলার হওয়ার পর থেকে আমাকে এবং আমার পরিবারকে বিভিন্ন ভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হচ্ছে। মামলা হওয়ার কয়েকদিন পর রাজ গোপনে এলাকায় অবস্থান নেয়। এ সময় সে আমাদের বাড়ীর চারপাশ দিয়ে ঘুরাঘুরি করে এবং প্রকাশ্যে হুমকি ধামকি দিতে থাকে। তাছাড়া রাজের চাচা খলিল ঢালী আমাকে হুমকি দিচ্ছে মামলা প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্য। মামলা প্রত্যাহার করা না হলে আমাকে সহ পরিবারকে জীবননাশের হুমকি দিচ্ছে তারা। বিষয়টি গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে পুলিশ সুপারকে অবহিত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জোর দাবি জানাচ্ছি। তাছাড়া মামলার প্রধান আসামী শাহরিয়ার হোসেন রাজকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নেওয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি। একই সাথে আমার দায়ের করা মামলাটির চুড়ান্ত রিপোর্ট যাহাতে সত্য ঘটনা অবলম্বনে হয় সে বিষয়ে মহোদয়ের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছি।