২০০২ সালের ৩০ আগষ্ট সাতক্ষীরায় কলারোয়ায় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলার ঘটনায় অস্ত্র ও বিষ্ফোরক দ্রব্য আইনের দু’টি মামলায় আরো দু’জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।
সাক্ষ্য গ্রহণের ৭ম দিনে আজ সাক্ষ্য দিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ আবু আহমেদ ও কলারোয়া উপজেলা চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম লাল্টু। আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর সাক্ষ্যগ্রহণের পরবর্তী দিন ধার্য করা হয়েছে।
সাতক্ষীরা জজ কোর্টের পিপি এ্যাডভোকেট আব্দুল লতিফ জানান, সোমবার সাতক্ষীরার স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক বিশ্বনাথ ম-লের আদালতে দ’জনার সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়। আদালতের কাঠগড়ায় বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ৩৯ জন আসামী উপস্থিতি ছিলেন।
এরআগে সকাল ১০টায় অস্ত্র ও বিষ্ফোরক দ্রব্য আইনের দু’টি মামলায় কারাগারে থাকা ৩৯ জন আসামীকে সোমবার জেলা কারাগার থেকে স্পেশাল টাইব্যুনাল-৩ এর কাঠগড়ায় হাজির করানো হয়। সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে এ মামলার কার্যক্রম শুরু হয়। এ সময় সাক্ষী হিসেবে উক্ত দুই জনকে হাজির করানো হয়।
পিপি আরো বলেন চাঞ্চল্যকর এই মামলার অপর নয়জন আসামী পলাতক রয়েছেন এবং একজন সম্প্রতি মারা গেছেন।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন, সাতক্ষীরা জজ কোর্টের পিপি এ্যাডভোকেট আব্দুল লতিফ, অতিরিক্ত পিপি এ্যাডভোকেট আব্দুল বারি, অতিরিক্ত পিপি এ্যাডভোকেট ফাহিমুল হক কিসলু প্রমুখ।
অপরদিকে, আসামীপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন এ্যাডভোকেট শাহানারা আক্তার বকুল, এ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ (২), এ্যাডভোকেট সৈয়দ ইফতেখার আলী, এ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান পিন্টু, এ্যাডভোকেট কামরুজ্জামান ভুট্টো প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, ২০০২ সালের ৩০ আগষ্ট সকাল ১০টায় তৎকালিন বিরোধী দলীয় নেত্রী বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক মুক্তিযোদ্ধার ধর্ষিতা স্ত্রীকে দেখতে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে আসেন। সেখান থেকে যশোরে ফিরে যাওয়ার পথে তাঁর গাড়ি বহরে হামলা হয়। সকাল ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে বিএনপি’র নেতা-কর্মীরা কলারোয়ায় দলীয় অফিসের সামনে একটি যাত্রীবাহি বাস (সাতক্ষীরা-জ-০৪-০০২৯) রাস্তার উপরে আড় করে দিয়ে তাঁর গাড়ি বহরে হামলা চালায়। হামলায় আওয়ামী লীগের ১ ডজন নেতা-কর্মী আহত হন।
এঘটনায় প্রায়ত আওয়ামী লীগ নেতা কমান্ডার মোসলেম উদ্দীন বাদী হয়ে কলারোয়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ সেটি গ্রহণ করেনি। পরবর্তীতে বিভিন্ন আদালত ঘুরে দীর্ঘ ১২ বছর পর হাইকোর্টের নির্দেশে ২০১৪ সালের ১৫ অক্টোবর মামলাটি এজাহার হিসেবে গণ্য করা হয়।
পরবর্তীতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক শফিকুর রহমান ৫০ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
ইতোমধ্যে মামলাটির দন্ডবিধির অংশের (টিআর-১৫১/১৫) বিচার প্রক্রিয়া সাতক্ষীরার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে নিষ্পত্তি হয়েছে এবং গত ২০২১ সালের ৪ ফেব্রুয়ারী মামলার ৫০ জন আসামীর সকলের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় বিভিন্ন মেয়াদের সাজা প্রদান করা হয়।
মামলার অস্ত্র ও বিষ্ফোরক আইনের দুটি অংশ এসটিসি ২০৭/১৫ ও এসটিসি ২০৮/১৫ সাতক্ষীরা অতিরিক্ত দায়রা জজ-২য় আদালতে সাক্ষ্য গ্রহণ অব্যাহত রয়েছে।