খুলনায় সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম মঞ্জুসহ ১৮জন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে চার্জগঠন করেছে আদালত।
মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) খুলনার অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত ১৯৭৪ সালের স্পেশাল পাওয়ার এ্যাক্টের ১৫(৩)/২৫-ডি ধারায় চার্জ গঠন করেন। ২১ শে আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলায় বিএনপির তৎকালীন সিনিয়র ভাইস-চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের প্রতিবাদে নগরীর কেডিএ এভিনিউ তেতুলতলা মোড়ে ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর নাশকতা সৃষ্টির লক্ষ্যে জমায়েতের অভিযোগে সোনাডাঙ্গা থানায় দায়েরকৃত ১৯ নম্বর মামলা এটি।
মামলাটিতে যাদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করা হয়েছে, তারা হলেন- বিএনপি’র কেন্দ্রীয় অব্যহতিপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক ও নগর শাখার সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু, বিএনপি নেতা মোঃ সাজ্জাদ আহসান পরাগ, মোঃ সাইফুল ইসলাম বকশী, জামায়াত নেতা এ্যাড. মনিরুল ইসলাম পান্না, এসএম জাহাঙ্গীর আলম, মোঃ বাকার বকশী, মোঃ ফরহাদ বকশী, আবুল কালাম আজাদ, মোঃ আসলাম, আব্দুর রহিম চৌধুরী হেলাল, আব্দুল মজিদ গাজী, মোল্যা মাসাদুর রহমান, এম আকরাম হোসেন মোল্লা, কাজী নূর মোহাম্মদ নূর, সৈয়দ শামীম আহসান, শেখ মাবুবুর রহমান রতন, মোঃ বায়জীদ ও অহিদুল ইসলাম। এছাড়া বিএনপি কর্মী অহিদুজ্জামান খোকন মৃত্যুবরণ করায় তার বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়নি।
এজাহারে উল্লেখ্য রয়েছে, ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর রাত পৌনে ১১টার দিকে সোনাডাঙ্গা থানাধীন তেতুলতলা মোড়ে ২১ শে আগষ্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ে বিএনপির সিনিয়র ভাইস-চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে সরকার উচ্ছেদ, শেখপাড়াস্থ ৩৩/১১ কে.ভি উপকেন্দ্র, ডিভিশন-১ (কেপিআই), বাংলাদেশ বেতার খুলনা ভবন, (কেপিআই) ধ্বংস, সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক নাশকতা করা, খুলনাকে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে সরকারকে বিব্রত করার উদ্দেশ্যে বিএনপি এবং জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা তাদের হাতে বিভিন্ন ধ্বংসাত্মক অস্ত্র-সন্ত্র, লোহার রড, বাঁশের লাঠি এবং ইটের টুকরো নিয়ে তেতুলতলা মোড়ে সমবেত হয়। আসামীরা ল্যাম্পপোষ্টের আলোর সাহায্যে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে দৌড় দেয়।
চার্জগঠন শুণানী পর্বে আসামীপক্ষে শুণানীতে অংশ নেন এ্যাড. আব্দুল মালেক, এসএম মঞ্জুর আহম্মেদ, মোল্লা গোলাম মওলা, লস্কর শাহ আলম, বেগম আক্তার জাহান রুকু, মোঃ আছাদুল আলম, মোঃ রফিকুল ইসলাম, মোঃ ওমর ফারুক রনি ও এ্যাড. মোঃ কামাল হোসেন।
আইনজীবীদের সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ হভপঠা ১০ অক্টোবর এসআই উজ্জ্বল সরকার বাদী হয়ে সোনাডাঙ্গা মডেল থানায় ৭জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১৪০/১৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা এস আই হরষিৎ ২০১৯ সালের ২৭ জুলাই আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন। ওই বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর চার্জশিট আমলে নেন আদালত। কয়েক দফায় বিচারক বদলীর পর মঙ্গলবার চার্জগঠনের মধ্যদিয়ে মামলাটির বিচার কার্য শুরু হল।
এ সম্পর্কে খুলনা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, “কল্পকাহিনী সাজিয়ে রাজনৈতিক প্রতিহিংসামুলক এসব মামলার আদেও কোন ভিত্তি নাই। স্বাধীন ও নিরপেক্ষ বিচার ব্যবস্থা থাকলে চার্জগঠনের পূর্বেই মামলাটি নিষ্পত্তিই হয়ে যেতো। ফ্যাসিস্ট সরকার পুলিশ তথা রাষ্ট্রকে অপব্যবহারের উজ্জল দৃষ্টান্তই হলো এসব মামলা দায়ের, চার্জগঠন ও বিচারের নামে প্রসহন। এটা বিরোধী দল-মতের নেতাকর্মীদের হয়রানি ছাড়াই ছিলই না।”
প্রসঙ্গত্ব, গত ২৫ ডিসেম্বর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম মঞ্জুকে দল থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। এরআগে ৯ ডিসেম্বর নগর ও জেলা বিএনপির আংশিক আহবায়ক কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্র; ঘোষিত এ কমিটির সমালোচনা করে প্রেসব্রিফিং করার দায়ে তাকে দল থেকে অব্যহতি দেয়া হয়েছে।