প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সরবরাহ না করায় প্রায় ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে আরটি-পিসিআর সংবলিত মডার্ন মাইক্রোবায়োলজি ল্যাবটি কোনো কাজে আসছে না। বর্তমানে এটি হবিগঞ্জ শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজের রেস্ট হাউজে পরিণত হয়েছে।
অভিযোগ উঠেছে, গত কয়েক মাস ধরে মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ সুনির্মল রায় ভবনটিকে বাসস্থান হিসেবে ব্যবহার করছেন।
করোনা মহামারীর সময়ে করোনা রোগী শনাক্ত করার জন্য সরকার হবিগঞ্জ শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজে পিসিআরসহ মাইক্রো বায়োলজি ল্যাব তৈরির জন্য একটি প্রকল্প গ্রহণ করে। কিন্তু ৫ বছরেও শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজের নিজস্ব ক্যাম্পাস না হওয়ায় শুরু থেকেই হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা হাসপাতালের নতুন ভবনের ২টি ফ্লোর অস্থায়ী ক্যাম্পাস ও অফিস হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে।
ফলে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালের আইসোলেশন বিভাগটিতে ল্যাব স্থাপন করার জন্য স্থান নির্ধারণ করা হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কক্ষটি দিতে প্রথমে গড়িমসি শুরু করেন। এ নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপে দ্রুত সময়ে আইসোলেশন বিভাগ থেকে পুরনো মালামাল সরিয়ে নেওয়া হয়।
হবিগঞ্জ গণপূর্ত বিভাগ ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে আইসোলেশন বিভাগে ৭টি এসি, নতুন টাইলস, সিলিং, পানি, বিদ্যুৎ সরবরাহের মাধ্যমে মডার্ন মাইক্রো বায়োলজি ল্যাব স্থাপনে উপযোগী করে দেয়।
কাজ শেষ হওয়ার পর ল্যাবটি হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক নাকি মেডিকেল কলেজ অধ্যক্ষ গ্রহণ করবেন এ নিয়ে শুরু হয় ঠেলাঠেলি। নানা অজুহাত দেখিয়ে কেউ এর দায়িত্ব নিতে রাজি না হওয়ায় এভাবে প্রায় ৬ মাস পার হয়ে যায়।
অবশেষে গত ১১ এপ্রিল গণপূর্ত বিভাগ শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসার ডা. সুনির্মল রায়ের কাছে ল্যাবটি হস্তান্তর করে। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ল্যাবের একটি এসি রুমে চেয়ার, টেবিল, পালং, পর্দা, টেলিফোনসহ অন্যান্য সরঞ্জাম দিয়ে সুসজ্জিত করা হয়েছে।
বারান্দায় দাঁড়িয়ে ওই কক্ষে অবস্থানরত অধ্যক্ষ সুনির্মলকে সেখানে থাকার কারণ জানতে চাইলে তিনি উত্তর না দিয়ে দ্রুত বাথরুমে চলে যান। এ সময় তার সঙ্গে কলেজ থেকে আসা পিয়ন স্বাধীন সরকার ভবনের মূল গেটে তালা লাগিয়ে এ প্রতিনিধিকে নিয়ে বের হয়ে যান। স্বাধীন জানান, ‘স্যারের বাসা না থাকায় এখানে থাকেন।’
ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের স্থানীয় প্রতিনিধি আব্দুল আজিজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, করোনা মহামারীর বিষয়টি চিন্তা করে ল্যাব উপযোগী করতে দিন-রাত কাজ করিয়েছি। দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য গণপূর্ত বিভাগ দৌড়ের ওপর রেখেছিল। দুঃখের বিষয় এখন তা রেস্টহাউজ হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। এখনো কাজের বিল না পাওযায় প্রতিদিন অফিসে ধরনা দিচ্ছি।
এদিকে মেডিকেল কলেজের মাইক্রো বায়োলজি বিভাগের প্রধান ডা. কান্ত্রিপ্রিয় দাশের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘মেশিনপত্র কবে আসবে তা তারা জানেন না। ভবনটি খালি পড়ে থাকায় সেখানে অধ্যক্ষ সুনির্মল রায় আপাতত বসবাস করছেন। মেশিনপত্র এলে তিনি সরে যাবেন।’
তথ্য সুত্র- দৈনিক দেশ রুপান্তর