গোপালগঞ্জের বেদগ্রামের শেখ মো. ইরানের চুলের জট সাত ফুট লম্বা। এই জটের বয়স ১৯ বছর। দীর্ঘ লম্বা এই জট চুল নিয়েই অবলীলায় ঘুরে বেড়ান ইরান। দীর্ঘ জট চুলে যাতে ময়লা না লাগে তার জন্য সার্বক্ষণিক কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখেন তিনি। মাঝেমধ্যে স্ত্রীর সহায়তা নিয়ে পরিষ্কার করে পুনরায় কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখা হয়। খালি পায়ে দুই হাতের সাহায্য নিয়ে ঘাড়ে ভর করে নির্বিঘ্নে চুলের জট নিয়ে চলাচলকারী মো. ইরানকে দেখতে তাই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজন আসেন। সহায়তার পাশাপাশি জট চুল নিয়ে তাদের নেতিবাচক মন্তব্য ইরান শেখকে আরও বেশি উৎসাহ যোগায়।
চুলের জটকে কাঁধে ঝুলিয়ে শহর, গ্রাম, প্রত্যন্ত এলাকা, মাইলের পর মাইল পথ খালি পায়ে হেঁটে বেড়ান শেখ ইরান। কখনও বিদ্রুপ মন্তব্য, কখনও চক্ষুশূল, আবার কখনও অপলক দৃষ্টিতে মানুষ তার দিকে তাকিয়ে থাকেন। কৌতুহল নিয়ে অনেকে বিশাল আকৃতির চুলের জটটি ধরেও দেখেন। কেন, কি কারণে তার এই বেশ এসব নানাবিধ প্রশ্নে তাকে বিভিন্ন সময় জর্জরিত হতে হয়। তাতে মনঃক্ষুণ্ন না হয়ে এর ইতিহাস জানান তিনি।
শেখ ইরানের মতো তার বাবা শেখ মো. মোদাচ্ছেরেরও চুলে জট ছিল প্রায় ৫ ফুট। ২০০৪ সালের ৩১ মে তিনি
মারা গেলে ভোরে পিতাকে স্বপ্ন দেখেন ছেলে ইরান। এরপর শুরু জট কাহিনী। সেই থেকে জট হতে হতে এখন সাত ফুট লম্বা। প্রতিনিয়ত দীর্ঘকায় হচ্ছে তার জট।
১৯ বছরে জটে কখনও তেল দেননি তিনি। প্রতিদিন গোসল করলেও তিন মাস পরপর জটে শ্যাম্পু দিয়ে পরিস্কার
করা হয়। এতে তাকে সহায়তা করেন সহধর্মিনী। জটের কারণে শরীরে কোনো পাশ্বপ্রতিক্রিয়া হয়নি কখনও। তেমন কোনো ভোগান্তিতেও পড়তে হয়নি। শারীরিকভাবেও সবসময় সুস্থ থাকেন তিনি।
অন্যের জমিতে বর্গা খেটে স্ত্রী ও তিন সন্তানকে নিয়ে শেখ মো. ইরানের টানপোড়েনের সংসার। তবুও এই জট
নিয়েই তিনি থাকতে চান। পিতার মৃত্যুবার্ষিকীতে প্রতিবছর তার ভক্তদের নিয়ে ওরস হয়। সেখানে ইরানকে আর্থিকভাবে সহায়তা করেন তার ভক্তরা। এই সহায়তা তার উৎসাহ।