“মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য” ভূপেন হাজারিকার গাওয়া এই বিখ্যাত গানের কলি আমরা রার বারই গুনগুন করে গাই। কিন্তু অন্তরে উপলব্ধি করি খুব কম মানুষই। আমরা কবিতা আর গানে মানবিকতার কথা বললেও বাস্তব বড়ই নিঠুর। সভ্য পৃথিবীর অসভ্য দংশনে প্রতিনিয়তই জর্জরিত হচ্ছে অসংখ্য অসহায় নিরান্ন মানুষ। তারই প্রমাণ শারীরিক প্রতিবন্ধী (সচ্ছল পা বিহীন) মোঃ আলামিন।
পঙ্গুত্বের কাছে হার না মেনে অসচ্ছল পা দিয়ে চালাতেন ০৫ জনের সংসার। জীবন যুদ্ধে হার না মানা মানুষটির আয়ের একমাত্র অবলম্বন ছিলো তার মটর চালিত ভ্যান। অথচ গত ২১ মার্চ ২০২৪ তারিখে বেলা ১১ টার সময় একজন কতিপয় দুষ্কৃতকারী আলামিন নামের প্রতিবন্ধীর নাম্বারে প্রথমে একটা ফোন দিয়ে বলে আমার বাড়ি শাহপুর গাজী পাড়ায়। দুষ্কৃতকারী বলে আমি দুই বস্তা গরুর খাবার পালিস নিয়ে আসবো বুধহাটা থেকে যাবো আর আসবো বলে একপর্যায়ে তার সাথে প্রতিবন্ধী ভ্যান চালক আলামিন ২০০ টাকার ভাড়ায় চুক্তিতে নিয়ে যায়। যেয়ে তারপর কাঁদাকাটি ফাঁকা মাঠের মাঝে নিয়ে তার উপার্জনের একমাত্র অবলম্বন ভ্যান গাড়িটি জোরপূর্বক ছিনতাই করে নিয়ে যায়।
শারীরিক প্রতিবন্ধী মোঃ আলামিন তার উপর্জানের একমাত্র মাধ্যম ভ্যানটি হারিয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে অসহায় হয়ে পড়েন।
উক্ত ঘটনায় ভ্যান হারানো শারীরিক প্রতিবন্ধী আলামিনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে তালা থানার অফিসার ইনচার্জ জনাব মো: মমিনুল ইসলাম পিপিএম এর দিকনির্দেশনায় এ এস আই (নি:) মো: আনিছুর রহমান সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে আলামিনের মোবাইলে ফোন করা নাম্বারের সূত্র ধরে ২৮ মার্চ ২০২৪ তারিখ বিকালে অভিযান চালিয়ে আশাশুনি কুল্লোর মোড় থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় ভ্যান গাড়িটি উদ্ধার করা হয়। এই রহস্য উদঘাটনের একটা মাধ্যম ছিলো একটা মোবাইল ফোন নাম্বার যেটা ছিলো ছিনতাই কারীর রাস্তায় কুড়িয়ে পাওয়া একটা সীম। যার নামে সীমটা রেজিষ্ট্রেশন সে অসচেতন হওয়ায় হারানো সিম টা সম্পর্কে কোন ব্যাবস্হা গ্রহন করেন নি। আর যে ভ্যানটি ছিনতাই করেছে সে এক গরীব ভ্যানচালকের কাছে সল্পমুল্যে ভ্যানটি বিক্রি করে এলাকার বাইরে পালাতক রয়েছে ।
তালা থানা পুলিশ তাকে দেয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী তার ভ্যানটিও উদ্ধার করে দেয়। মূলত ভ্যানটি হারিয়ে অকূল পাথহারা হয়ে পড়েন আলামিন। দ্বারে দ্বারে ঘুরে যখন নিরাশ হয়ে পড়েছিলেন, ঠিক তখনই সর্ব্বোচ গুরুত্ব দিয়ে এই মানুষটির পাশে দাঁড়ায় তালা থানা পুলিশ। হারানো ভ্যান ফিরে পেয়ে সে অশ্রু সজল হয়ে পড়েন। বার বার কৃতজ্ঞতায় ভিজে ওঠে তার চোখ। এসময় আবেগ জড়িত কন্ঠে আলামিন জানান- তালা থানা পুলিশের সহযোগিতা, তাদের কর্ম তৎপরতা ও মানবিকতায় তিনি কৃতজ্ঞ। তিনি আবেগ আপ্লুত। তিনি কথা বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছেন। তালা থানার পুলিশের কারণেই তিনি নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখছেন। তিনি তালা থানা পুলিশের সার্বিক মঙ্গল কামনা করেন।
তালা থানার এ এস আই (নি:) মো: আনিছুর রহমান এশিয়ান টেলিভিশনকে জানান- আলামিন শারীরিক প্রতিবন্ধী হয়েও সে একজন ভ্যান চালক। ডিউটি অফিসার হিসেবে সেদিন তালা থানায় মটর ভ্যান ছিনতাই অভিযোগ নিয়ে আসে আমার কাছে। বিস্তারিত জানার পর তাকে দেখে খুব কষ্ট লাগলো। তাৎক্ষণিক ওসি স্যারকে অবগত করার পর সর্বোচ্চ সহযোগিতায় অভিযান পরিচালনা করে তার ভ্যানটি উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।আর
ইতিমধ্যে আনিছুর রহমান বর্তমানে তালা থানায় অসহায় মানুষের পুলিশ অফিসার হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।