অভিযুক্তরা হলেন তালার আসাননগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক প্রতাপ কুমার সাহা ও একই উপজেলার সরুলিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বীরেন্দ্র নাথ সাহা। তারা উপজেলার কৃষ্ণনগর গ্রামের ললিত মোহন সাহার ছেলে।
এর মধ্যে বীরেন্দ্র নাথ সাহা ২০০৮ সালে ও প্রতাপ কুমার সাহা ২০০৯ সালে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কোটায় নিয়োগপ্রাপ্ত হন।
চলতি বছর ১৯ জুন সাতক্ষীরা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হোসনে ইয়াসমিন করিমী স্বাক্ষরিত স্মারকের মাধ্যমে তাদের বরখাস্তের আদেশ দেওয়া হয়।
এতে বলা হয়, তাদের বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর ৪ (৩) (ঘ) ধারা অনুযায়ী অসদাচরণ ও দুর্নীতির আওতাভুক্ত অপরাধের কারণে তাদেরকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়া মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের স্মারক ও ৩১ জুলাই ২০২১ তারিখের পত্রে মতামত প্রদান করে যে মুক্তিযোদ্ধা দাবিদার ললিত মোহন সাহার নামে দাখিলকৃত মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাময়িক সনদ সঠিক নয়। এতে মুক্তিযুদ্ধের কোনো স্বীকৃতি প্রমাণক পাওয়া যায়নি বলে উল্লেখ করা হয়।
তালা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (প্রাথমিক) গাজী সাইফুল ইসলাম জানান, ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদ দাখিলের বিষয়ে তারা বিভাগীয় মামলায় শুনানিতে সন্তোষজনক জবাব দাখিল করতে না পারায় শিক্ষা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের বিরুদ্ধে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
তালা উপজেলার কৃষ্ণনগর গ্রামের মৃত বসন্ত সাহার ছেলে মৃত লোলিত মোহন সাহা জীবদ্দশায় নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা দাবি করে একাধিক ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদ প্রস্তুত করেন।
মূলত এ সব সনদ তার দু’ছেলে বীরেন্দ্র নাথ সাহা ২০০৮ সালে ও প্রতাপ কুমার সাহা ২০০৯ সালে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কোটায় নিয়োগপ্রাপ্ত হন। বিষয়টি জানতে পেরে তবিবুর রহমান ললিতের মুক্তিযোদ্ধার সার্টিফিকেট ও তার দেওয়া প্রত্যয়নপত্রটি নিয়ে সাতক্ষীরা আমলী আদালতে প্রতাপ কুমার সাহা ও তার ভাই বীরেন্দ্র নাথ সাহার বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন।
এদিকে, দাদু ললিত মোহনকে মুক্তিযোদ্ধা দেখিয়ে ভুয়া সনদে বাবা ও কাকাদের বিভিন্ন সরকারি চাকরি গ্রহণের জারি ও জুরি ফাঁস হওয়ায় সর্বশেষ যাচাই ও বাছাই কার্যক্রমকে প্রভাবিত ও এরআগে উত্থাপিত জাল সনদপত্রের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে চূড়ান্ত সনদপত্র সংগ্রহের জন্য বিভিন্ন মহলে ব্যাপক দৌড়-ঝাঁপ শুরু করে ললিতের পৌত্র সুমন সাহাসহ স্বজনরা। এমনকি কথিত মুক্তিযোদ্ধা ললিতের তঞ্চকতাপূর্ণ সার্টিফিকেট’র তথ্য ফাঁস হওয়ায় অনলাইন আবেদন ঠিক রেখে নতুন করে সার্টিফিকেট প্রস্তুত করতে পরিবারের পক্ষে বিভিন্ন মহলে দৌড় ঝাঁপের পর সর্বশেষ যাচাই ও বাছাই তালিকায় নাম সম্পৃক্ত করতে উঠে পড়ে লাগেন। সর্বশেষ কমিটির একটি পক্ষকে ম্যানেজ করে দ্বিধা বিভক্ত তালিকায় নাম সম্পৃক্ত করতে সক্ষম হলেও শেষ রক্ষা হয়নি তাদের।